কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতা-নাশকতায় পুরো দেশ ক্ষতিগ্রস্ত। অর্থনৈতিক যে সম্ভাবনাগুলো তৈরি হয়েছিল, সেগুলোর ওপর আঘাত এসেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক অনেক বেশি। সহিংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞও আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসী ও অপরাধী চক্র সংগঠিত হয়। ক্ষেত্র বিশেষে তারা রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ও পেয়ে থাকে। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অস্থিতিশীলতার সুযোগ সব সময়ই অপরাধী চক্র নিয়ে থাকে। অতীতেও এমন দেখা গেছে। সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষার্থীদের অরাজনৈতিক ইস্যুকে রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত করে সারা দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে, ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালানো হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্য বলছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে নাশকতার পরিকল্পনা ছিল কয়েকটি রাজনৈতিক দলের। তারা অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছিল। ব্যাপক সহিংসতার মধ্যে তাদের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হামলার পরিকল্পনাও ছিল। মূল লক্ষ্যবস্তু ছিল রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, কোটা সংস্কার আন্দোলনের ভেতরে ঢুকে নাশকতা চালাতে বস্তির অল্প বয়সী কিশোরদের অর্থের বিনিময়ে ভাড়া করা হয়। এরা নাশকতা, হামলা ও সহিংসতার মধ্যে অনেক স্থানে লুটপাটও চালায়। বিশিষ্টজনরা বলছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে দেশের কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করাও সহজ হবে না। গত ১৫ বছরে দেশের অর্থনীতির যে অগ্রগতি হয়েছে, তা ধ্বংস করে দেশকে আবারও পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে প্রায় ভেঙে দেয়া হয়েছে। দেশের অর্থনীতিতে যে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে, তা সমাধানে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। নাজুক অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্যে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশজুড়ে সহিংস পরিস্থিতির কারণে এই শিল্পের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আন্দোলন থামাতে ইন্টারনেট বন্ধ করার পাশাপাশি কারফিউ জারি করায় ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনীতি বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। এই ধাক্কা সামলে উঠতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। আমদানি-রফতানি স্বাভাবিক এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে অর্থনৈতিক ক্ষতি পূরণে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে সবার আগে সরকারকে বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে।
